চন্দন বারিক, দিঘাট্রিপ.কম : ছুটির আমেজে লক্ষাধিক পর্যটকের ভীড় উপচে পড়েছে সৈকত শহর দিঘায়। যার জেরে অধিকাংশ হোটেল হাউসফুল। আর এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েই গোটা দিঘা জুড়ে একশ্রেণীর হোটেলে শুরু হয়েছে গোটা দেদার কালোবাজারি।
যেখানে বছরের অন্যান্য দিন হোটেলের ভাড়া ঘরপিছু ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, সেগুলোই এখন বিকোচ্ছে ৪হাজার থেকে ৫হাজার টাকা দরে। আর সবটাই চলছে এক্কেবারে প্রকাশ্যে, প্রশাসনের নাকের ডগায়।
আর এই কালোবাজারির জেরে শনিবার এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সাক্ষী থাকল সৈকত শহর। যেখানে এত বিপুল টাকায় ঘর নিতে না পেরে শিশুদের নিয়ে খোলা আকাশের নীচে স্টেশনে, রাস্তায়, মাঠে শুয়ে রাত কাটাচ্ছেন দূর দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার পর্যটকরা।
শেষ ছুটি কাটাতে এদিন সন্ধ্যের ট্রেনে দিঘায় চলে এসেছেন কাতারে কাতারে মানুষ। কিন্তু তাঁদের অধিকাংশের সামর্থ্যই নেই একটি মাত্র রাতের জন্য এত বিপুল টাকা দিয়ে হোটেলে থাকার। যারা ঘর নিতে পারেননি তারা চলে গিয়েছেন স্টেশন চত্বরে।
আর অল্প সময়ের মধ্যেই সেই জায়গাও পরিপূর্ণ। অগত্যা গাছতলায়, বা ফাঁকা মাঠের মাঝে আশ্রয় নিয়েছেন পর্যটকরা। কিভাবে হচ্ছে এই কালোবাজারি? আসলে দিঘা হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশান যতই মুখে বলুক কালোবাজারি হয় না তা সম্পূর্ণ অসত্য।
কিছু হোটেল ঘর প্রতি নির্দিষ্ট দর বেঁধে রাখলেও অধিকাংশ হোটেলই এই নিয়মের কোনও তোয়াক্কাই করেন না। তাই পর্যটক কম থাকলে যে ঘর ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, তাই আবার ভীড় জমলে হয়ে যায় ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার। প্রায় অধিকাংশ হোটেলেই ঘরের দামের কোনও তালিকা ঝোলানো নেই।
এখন তো লোকলজ্জজার ভয় কাটিয়ে বহু হোটেলের দর বাড়িয়ে করা হয়েছে দিনপ্রতি ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। এভাবে প্রশাসনের চোখের সামনে লাগাম ছাড়া কালোবাজারি চলতে থাকলেও তা নিয়ে কোনও হেলদোল নেই স্থানীয় প্রশাসনের। আর তারই পরিণতি, এদিন খোলা আকাশের নীচে শিশুদের নিয়ে রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন পর্যটকরা।