চন্দন বারিক, দিঘাট্রিপ.কম : দিঘায় বেড়াতে এসেছেন। চাইছেন সমূদ্রে নেমে একটু জলকেলি করার। তাহলে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে একটি বড়সড় দুঃসংবাদ। আগামী দু’দিন আপনি কোনওভাবেই সমূদ্রে স্নান করতে বা জলে পা ডোবাতেও পারবেন না।
কারন, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন থেকে একটি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ১২ নভেম্বর অর্থাৎ আগামী কাল মঙ্গলবার রাত্রি পর্যন্ত এই নির্দেশিকা বলবৎ থাকবে। যা কার্যকর করতে জোরদার তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে দিঘা সমূদ্র সৈকত জুড়ে।
রামনগর-১ ব্লকের বিডিও আশিষ কুমার রায় জানিয়েছেন, দিঘা থানায় ২০ জন, দিঘা কোষ্টাল থানায় ১০ জন এবং মন্দারমনি কোষ্টাল থানায় ১০ জন করে সিভিল ডিফেন্স কর্মী দেওয়া হয়েছে। এই প্রশিক্ষিত কর্মীরা আদামী দুই দিন সমূদ্রে নজরদারীর ক্ষেত্রে পুলিশকে বিশেষ ভাবে সহায়তা করবে। সেই সঙ্গে রামনগর-১ ব্লকের তরফ থেকে দিঘা ও মন্দারমনি এলাকায় সারাদিন ধরে মাইকিং-এর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পর্যটকরা যাতে বিপদসংকুল সমূদ্রে পা না রাখেন তারজন্যই এই সচেতনতামূলক প্রচার করা হচ্ছে।
দিঘায় সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের পাশাপাশি বিপুল পরিমানে নুলিয়া ও সিভিক ভলেন্টিয়ারও মোতায়েন করা হয়েছে দিঘা জুড়ে। এছাড়াও বিশাল পরিমানে পুলিশ বাহিনীও কড়া হাতে নির্দেশ পালনে নেমে পড়েছে।
দেখুন ভিডিওটি-
কেন এই নজির বিহীন নির্দেশিকা ?
দিঘা থানা সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল-এর প্রভাবে সমূদ্রের জলে জোরদার কারেন্ট উৎপন্ন হয়েছে। অর্থাৎ জলের চোরা গতি মারাত্মক ভাবে বইছে। এর ফলে যে কোনও সময় বড়সড় বিপদ ঘটে যেতেই পারে। প্রসঙ্গতঃ শনিবার রাতে বুলবুল ঝড় শেষ হওয়ার পর রবিবার সকাল থেকে দিঘায় সমূদ্রে নামার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
আর এই এক দিনেই ওল্ড ও নিউ দিঘায় দুই পর্যটকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। দুই ক্ষেত্রেই মদ্যপ অবস্থায় পর্যটকদের স্নানে নামার ঘটনা প্রাথমিক ভাবে প্রকাশ্যে এলেও জলের এই চোরা স্রোতও এই মৃত্যুর কারন হতে পারে বলে জেলা প্রশাসন জানতে পেরেছে।
আর তারপরেই তড়িঘড়ি মঙ্গলবার রাত্রি পর্যন্ত দিঘার বিস্তীর্ণ সমূদ্র তটে জলে পা নামানোর ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা হয়েছে। সোমবার বেলার দিকে দিঘা থানায় এই মর্মে নির্দেশিকা আসার পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। তাঁরা তড়িঘড়ি দিঘার সমস্ত ঘাট গুলোতে দড়ি দিয়ে ঘিরে দিয়েছে। যারা সমূদ্রে নেমে গিয়েছিলেন, বা সমূদ্রের জলের কাছাকাছি ঘোরাফেরা করছিলেন সবাইকেই সেখান থেকে হঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি সকাল থেকেই টানা মাইকিং শুরু করা হয়েছে। কেউ যদি নির্দেশিকা অমান্য করে সমূদ্রে নামেন তাহলে তাঁকে আটক করা হতে পারে বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।