
চন্দন বারিক, দিঘাট্রিপ.কম : কিভাবে মোকাবিলা করা হবে সুপার সাইক্লোন আমফান-এর। তারই ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করতে মঙ্গলবার নবান্নে জরুরি বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে এদিন সন্ধ্যায় তিনি জানিয়ে দেন, রাজ্য জুড়ে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দিয়েছে প্রশাসন।
যার মধ্যে অধিকাংশই দুই ২৪ পরগনা জেলার বাসিন্দা। বাকি প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে পূর্ব মেদিনীপুরের সমূদ্র তীরবর্তী বিপজ্জনক এলাকা থেকে সরিয়ে বিভিন্ন ফ্লাড সেন্টার সহ রিলিফ সেন্টারগুলিতে রাখা হয়েছে। তবে অন্যবারের তুলনায় এবার সমস্যা কিছুটা আলাদা।

কারন কোভিড-১৯ এর মোকাবিলার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, স্যানিটাইজের দিকটিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় ৭১ কিমি সমূদ্র তীরবর্তী এলাকার সমস্ত জায়গাতেই বিশেষ ভাবে নজরদারী শুরু হয়েছে। অপেক্ষাকৃত ভগ্নপ্রায়, বিপজ্জনক বা কাঁচাবাড়িগুলি থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
ইতিমধ্যে আমফানের জন্য বিশেষ সর্তকতা জারি হয়েছে দিঘার সমুদ্র উপকূল এলাকায়। দিঘা থানা ও দিঘা মোহনা থানার পক্ষ থেকে সমূদ্র তীরবর্তী এলাকাগুলিতে মাইকিং করা হয়েছে। এই সময় সাধারণ মানুষকে সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হয়েছে।

এরই পাশাপাশি মৎস্যজীবিদেরও সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সমুদ্র এলাকায় গ্রামগুলোকেও সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। যদিও লকডাউনের ফলে দিঘা প্রায় জনশূন্য তবুও প্রশাসন সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে জানা গেছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের মধ্যে কাঁথি মহকুমা এলাকাতেই রয়েছে সুদীর্ঘ সমূদ্র তীরবর্তী এলাকা। তাই এই এলাকাতেই সব থেকে বেশী তৎপরতা রয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে। ইতিমধ্যে কাঁথির মহকুমাশাসক সহ বিডিও আধিকারীক রামনগর-১ ব্লকের বিভিন্ন ফ্লাড সেন্টারগুলো পরিদর্শন করেছেন।
অন্যদিকে রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শম্পা মহাপাত্র দিঘা, তাজপুর, জামড়া, শংকরপুর, জলধা এলাকার মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন। ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক হওয়ার বার্তা দেন তিনি। তিনি এও জানান, এই ঝড়ের মোকাবিলার জন্য প্রশাসন সর্বদা প্রস্তুত থাকছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরের আবহাওয়ায় বদল এসেছে। আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছে। সেই সঙ্গে বিকেলের দিকে সামান্য বৃষ্টিপাতও হয়েছে। তাই কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়েই এলাকাবাসীদের সরিয়ে ফ্লাড সেন্টারগুলিতে রাখা হয়েছে। যেখানে তাদের জন্য খাওয়ারের আয়োজন করা হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে।