চন্দন বারিক, দিঘা : ভর দুপুরে চড়া রোদে আচমকাই পথ চলতি মানুষের নজরে আসে দিঘা বাইপাসের কাছে রেল লাইনে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে চিৎ হয়ে হয়ে শুয়ে আছে এক যুবক। এর ঘন্টাখানেক বাদে দিঘা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি রওনা দেওয়ার কথা পাহাড়িয়া এক্সপ্রেসের। কাছে ছুটে গিয়ে অনেক ডাকাডাকিতে সাড়া মিলল, “মায়ের কাছে যাব, তাই মরতে এসেছি এখানে”।
এমন কথা শুনেই হতবাক স্থানীয়রা। সবার জোরাজুরিতে একরাশ বিরক্তি নিয়ে রেল লাইন ছেড়ে উঠেই যুবকটির স্বগোতোক্তি, “ধূর, রেল লাইনে শান্তিতে মরাও যাবে না”। এরপর টলমল পায়ে রেললাইন ধরে ছুটে পালাতে গিয়ে পাশেই উল্টে পড়ে অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় থাকা যুবকটি। এরপরেই তাঁকে উদ্ধার করে দিঘার রেলপুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা।
কিছুটা চেতনা ফেরার পর যুবকটি জানায়, “মায়ের মৃত্যুর শোক ভুলতেই আজ মরতে এসেছিলাম। কিন্তু সবাই এসে আমাকে আজ মরতে দিল না”। রেল পুলিশের জেরায় যুবকটি জানিয়েছে, তাঁর নাম বন্ধন পয়ড়্যা, বাড়ি পাশের রাজ্য উড়িষ্যার চন্দনেশ্বরের কাছের নাপো’তে। গতকাল মা পার্বতী দেবীর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ছিল। মা’কে হারিয়ে শোকে মূহ্যমান ছেলে নিজের জীবন শেষ করতেই আজ দিঘায় ছুটে এসেছিল। মনে সাহস যোগাতে ভরপুর মদ খেয়ে চোখ বন্ধ করে রেললাইনে শুয়েছিল ট্রেন আসার অপেক্ষায়। কিন্তু স্থানীয়দের বাধায় সব ভেস্তে গেল, আফসোস ছেলেটির।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দিঘা থানা, দিঘা জিআরপি পুলিশ সহ দিঘার স্টেশন ম্যানেজার। শেষ পর্যন্ত দিঘা জিআরপি ছেলেটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তাঁর পরিবারকেও খবর দেওয়া হয়েছে। দিঘার স্টেশন ম্যানেজার সঞ্জীব দাস মহাপাত্র জানান, “যুবকটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁর পরিবার জানিয়েছে মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই চূড়ান্ত শোকাহত ছিল সে। সব জানার পর বাড়ির লোকেদের ডেকে আনা হয়েছে। তাঁরা এলেই তাঁদের হাতে ছেলেটিকে তুলে দেওয়া হবে”।